
প্রিন্ট: ২৯ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৯ পিএম
এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবিতে তুরস্কে তীব্র বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ পিএম

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্ক
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা এবং অন্যান্য শহরজুড়ে তীব্র সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শুক্রবার বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৩৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।
বুধবার তুর্কি কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির অভিযোগে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করে। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত এই মেয়রের গ্রেপ্তারের পরই তার সমর্থকরা উত্তাল আন্দোলনে নামে। বিরোধীরা গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছে এবং দ্রুত তার মুক্তি দাবি করেছে।
বিক্ষোভের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, “আমরা কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ কিংবা রাস্তার সন্ত্রাসকে সহ্য করব না।” আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভ দমনে রাবার বুলেট ও পিপার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে, বিশেষ করে ইস্তাম্বুল ও ইজমির শহরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা ওজগুর ওজেল শনিবার রাতে ইস্তাম্বুল সিটি হলের সামনে এবং দেশের অন্যান্য শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, “জনগণের প্রতিবাদ থামিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও বাধার মুখে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ইস্তাম্বুলে চার দিনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে আঙ্কারা ও ইজমিরে। তবে বিরোধী কর্মীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজপথে নেমেছেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়া বিরোধীদের “দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, অনলাইনে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে আরও ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী হিমশিম খাচ্ছে, এবং সংঘর্ষে পুলিশের ১৬ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ২২ বছর ধরে তুরস্কের শাসনক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ২০২৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। বিরোধীরা মনে করছে, সম্ভাব্য শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সরকার পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করছে, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিক্ষোভের তীব্রতা বাড়তে থাকায় দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।