তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’ পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিতর্কিত নাটক ‘লজ্জা’ পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তসলিমা নিজেই। তিনি লিখেছেন, মমতা ব্যানার্জি আজ আমার লজ্জা নাটকটি পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ করলেন।
গোবরডাঙ্গা ও হুগলির পাণ্ডুয়ার নাট্যউৎসবে লজ্জা নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। দু'মাস ধরে নাট্যউৎসবের বিজ্ঞাপন চলছিল। আর আজ, হঠাৎ মমতা ব্যানার্জির পুলিশ এসে জানিয়ে দিল, সব নাটক মঞ্চস্থ হবে, শুধু লজ্জা ছাড়া।
তসলিমা নাসরিন উল্লেখ করেন, নবপল্লী নাট্যসংস্থা দিল্লিতে তিনবার নাটকটি মঞ্চস্থ করেছে এবং তিনবারই প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ ছিল। তিনি বলেন, পুলিশ জানিয়েছে লজ্জা মঞ্চস্থ হলে মুসলিমরা দাঙ্গা বাঁধাবে। এই অজুহাতে তার মেগাসিরিয়াল ‘দুঃসহবাস’ও বন্ধ করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। লজ্জার ঘটনা বাংলাদেশের। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা কেন বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে দাঙ্গা বাঁধাবে, তা তার বোধগম্য নয়।
তসলিমা বলেন, মুসলিমরা দাঙ্গা বাঁধাবে এই অজুহাতে তাকে এক সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছিল।
সবশেষে তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা দাঙ্গা বাঁধাতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, শিল্প সাহিত্যকে নিষিদ্ধ করা হয় কেন? শিল্পী সাহিত্যিকের কন্ঠরোধ করা হয় কেন? এই প্রশ্নটি আর কত যুগ একা একা আমিই করে যাব? আর কারও দায়িত্ব নেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার?
প্রসঙ্গত, তসলিমা নাসরিনের লেখা ‘লজ্জা’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে। কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশে বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই উপন্যাস থেকেই তৈরি করা হয়েছিল ‘লজ্জা’ নাটক। ভারতের বাবরি মসজিদকে ঘিরে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সংঘটিত হলে এর প্রভাব পড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশেও। লজ্জা বইটি সেই সময়কার হিন্দু ধর্মালম্বীদের জীবনযাত্রা নিয়ে লেখা। বইটিতে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে হওয়া বৈষম্য সেক্যুলারিজমের ছায়ায় বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।