জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দামেস্কে ইসরায়েলের হামলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
সিরিয়া দখল করে বিদ্রোহীরা যখন বিজয় উদযাপনে ব্যস্ত, তখন দখলদার ইসরায়েল গোটা গোলান মালভূমিসহ দক্ষিণ সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ দখল করে নিয়েছে। ধারাবাহিক বিমান হামলায় ইসরায়েল ধ্বংস করে দিয়েছে সিরিয়ার অধিকাংশ সামরিক কাঠামো।
বিদ্রোহীদের হামলার জেরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছাড়ার পর এবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে নজর তেলআবিবের।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সিরিয়ায় হামলা বন্ধ করতে বলেছেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে রাত থেকেই হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি সেনা।
এবার সরাসরি নিশানা করা হয়েছে দামেস্ককে। গত রবিবার প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারকে উৎখাত করে সিরিয়ার রাজধানী দখল করেছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হয়নি।
সিরিয়ার ক্ষমতার পালাবদলের পরেই নেতানিয়াহু সরকার জানিয়েছিল, সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা প্রতিরোধে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল’ (বাফার জোন) গঠন করা হবে। আর তা হবে সিরিয়ার ভূখণ্ডে!
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের পর গোলান মালভূমি সংলগ্ন ‘বিতর্কিত অঞ্চল’-এ যে বাফার জোন তৈরি করা হয়েছিল, তা ইতোমধ্যেই দখল করে নিয়েছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। এর পরে ইসরায়েলি প্যারাট্রুপার এবং সাঁজোয়া বাহিনী ‘গ্রাউন্ড অপারেশন শুরু করেছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দামেস্কের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিরিয়া সেনার চতুর্থ ডিভিশনের সদর দপাতর ও রাডার স্টেশন ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে একনায়ক আসাদের শাসন থেকে মুক্তির জন্য সিরিয়ার নাগরিকদের উৎসব পালনের জমায়েতেও বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান।
এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই পশ্চিম এশিয়া সফরে গিয়েছেন আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি জর্ডনের সুলতান দ্বিতীয় আবদুল্লা এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এইচটিএস-নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার নতুন সরকার ইসরায়েলি হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার নতুন সরকারি মুখপাত্র ওবেদা আরনৌত জানিয়েছেন, একটি বিচারবিভাগীয় ও মানবাধিকার কমিটির গড়ে সংবিধান পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় রদবদলের বিষয়টি তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। কিন্তু তার আগেই ইসরায়েলি সেনা সিরিয়ার মানচিত্র বদলে দিতে পারে বলে সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন।