
প্রিন্ট: ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
ঈদের আগেও বেতন-বোনাস বঞ্চিত নারী ফুটবলার ও রেফারিরা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ)। দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করলেও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নারী ফুটবলার ও রেফারিদের পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাফুফের প্রশাসনিক স্টাফরা সময়মতো বেতন-বোনাস পেলেও ফুটবল ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারি এবং নারী ফুটবলাররা ঈদের আগে তাদের সম্মানী পাননি।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাফুফে ৩৬ জন নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করলেও, এখনো তাদের সম্মানী পরিশোধ করা হয়নি। সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানান, অনেক নারী ফুটবলার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না খোলায় বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ঈদের পর সম্মানী পরিশোধ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
তবে, বিশ্লেষকরা মনে করেন, ফেডারেশনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। বাফুফে ভবন ব্যাংক-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু মতিঝিলে অবস্থিত এবং নারী ফুটবলাররাও সেখানে অবস্থান করেন। স্পন্সর ঢাকা ব্যাংকের সহযোগিতায় দ্রুত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব হলেও তা করা হয়নি।
২০২২ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নারী ফুটবল দলকে বাফুফে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সাড়ে চার মাস পার হলেও সেই অর্থ এখনো প্রদান করা হয়নি।
রেফারিদের সম্মানী বকেয়া থাকা বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন কিছু নয়। তাবিথ আউয়ালের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার সময় রেফারিদের প্রায় ১ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। ধীরে ধীরে সেই বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও চলতি মৌসুমে মাত্র পাঁচ রাউন্ডের সম্মানী পরিশোধ করা হয়েছে।
প্রথম লেগের চার ম্যাচের সম্মানী ঈদের আগে পাওয়ার আশায় ছিলেন রেফারিরা। কিন্তু বাফুফে স্পন্সরদের কাছ থেকে অর্থ না পাওয়ার অজুহাতে তাদের কোনো অর্থ দেয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেফারি বলেন, "প্রথম লেগ শেষ হয়েছে এক মাসের বেশি সময় আগে, কিন্তু এখনো আমরা সেই অর্থ পাইনি। ঈদের আগে আমাদের অন্তত কিছু অর্থ দেওয়া উচিত ছিল।"
নির্বাচনের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে এখনো রেফারিজ কমিটি গঠন করতে পারেনি। ২০ মার্চ নির্বাহী সভার আলোচ্যসূচিতে এটি থাকলেও ইফতারের আগে সময় স্বল্পতার কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
রেফারিরা আগেই সম্মানী বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। বাফুফে তখন রেফারি তৈরির জন্য একাডেমি করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তিন মাস পার হলেও সেই একাডেমির কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি।
ফুটবল পরিচালনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেফারিং, কিন্তু বাফুফের নতুন কমিটি এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে নারী ফুটবলার ও রেফারিরা ঈদের আগেও তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত রইলেন।