
প্রিন্ট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৬ এএম
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা হয়েছে : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বর্তমানে সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর যে প্রয়াস চলছে, তা মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের এক ইফতার মাহফিলে তিনি লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “সংস্কার ও নির্বাচনকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে, যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। যেটি চূড়ান্তভাবে শেষ হয়ে যায়, সেটিকে সংস্কার বলা যায় না। কারণ, প্রকৃতপক্ষে সংস্কার কখনোই শেষ হয় না; এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংবিধানকে নানা সময়ে যেভাবে সংশোধন করা হয়েছে, তাতে এটি কার্যত একদলীয় ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হয়েছে। অথচ সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের ২(১) দফায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটেই জাতীয় সংসদ গঠিত হবে। কিন্তু অতীতে বারবার দেখা গেছে, জনগণের ভোট ছাড়াই জাতীয় সংসদ গঠন করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থী।
তারেক রহমান বলেন, “কেবল কেতাবি বা তাত্ত্বিক সংস্কার নয়, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার ও তার বাস্তব প্রয়োগই প্রকৃত সংস্কারকে টেকসই, সফল ও কার্যকর করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনীতির মূল ইস্যু থেকে দৃষ্টি সরাতে কিছু গৌণ বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হবে না এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া, যা পলাতক স্বৈরশাসকদের সহযোগীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেয়।”
তারেক রহমান সতর্ক করে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের অর্থ হলো, একসময়কার স্বৈরাচারী শাসকদের দোসরদের রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। দীর্ঘ দেড় দশক ধরে চলে আসা মাফিয়া শাসনের ফলে দেশে একটি প্রজন্মের প্রায় সাড়ে তিন কোটি নতুন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাননি। এদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় নির্বাচনই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।”
তারেক রহমান বলেন, “নাগরিকরা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন না হলে, কোনো সংস্কারই দীর্ঘস্থায়ী হবে না। জনগণের অংশগ্রহণ ও সরাসরি ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে, তাহলেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সফল হবে।”
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন—জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম ফায়েজ, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন আলমগীর, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ ও সৈয়দ আবদাল আহমেদ।