জাতীয় নির্বাচন দ্রুত চাওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
কেনো জাতীয় নির্বাচন দ্রুত চান তার ব্যাখ্যা দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দ্রুত চাই এজন্য যে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগনকে আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। সেজন্য এক হচ্ছে সংস্কার করতে হবে, তা নিয়ে যাবে পার্লামেন্টে সেইভাবে অনুমোদন করা হবে, ডিভেট করে সেখানে সেটা পাস করাতে হবে এবং তাদের জনপ্রতিনিধিকে গ্রহন করিয়ে সেটা করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে ততই দেশের জন্য মঙ্গল।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আস্থা রেখে দ্রুত নির্বাচনের কথা বললেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারি পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির তানিয়া রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির মহসচিব বলেন, ফাঁদ থাকলে সেখানে আমাদের এই শত্রুরা যারা চেষ্টা করছে আমাদের সমস্ত কিছু দখল করে ফেলা এবং বিপ্লবকে ব্যর্থতায় পরিণত করতে তারা সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে। আপনি দেখবেন বিভিন্ন মহল বিভিন্ন জায়গায় দাবি-দাওয়া নিয়ে আসছে… কেনো বাবা আগে কেউ করেনি…এখন নিয়ে আসছো? অপেক্ষা করো? জনগনের সরকার আসুক।
এসব বিষয়গুলো বুঝা উচিত মাথায় রাখতে হবে। অনেকে বলে যে, এতোদিন পারিনি তাই এখন দাবিগুলো নিয়ে আসছি। এটাতে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি একটু চিন্তিত হয়ে যাই, কিছুক্ষন আগে সাইফুল হক ভাই বলেছেন উদ্বিগ্ন হই… কখন কি বলেন যখন ওই খানেই আমাদের খটকা লাগে। আমি আশা করবো যে, আপনি একটা সরকারে আছেন দায়িত্ব পালন করছেন উপদেষ্টারা… তারা এমন কোনো কথা বলবেন না বা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে জনগন বিভ্রান্ত হয়।
তিনি বলেন, লোকাল গর্ভামেন্টে এডভাইজার সাহেব (হাসান আরিফ) যে বলেছেন, চার বছর সরকারের মেয়াদ। এটা তার বলার কথা নয়। তারা কমিশন গঠন করেছেন সেই কমিশন প্রস্তাব দেবেন, জনগন এক্সসেপ্ট করবে তারপরে না জনগন ঠিক হবে। কিন্তু যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন তিনি যদি বলেন যে, সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে তাহলে একটা চাপ পড়ে যায়; এই কাজটা হাসিনা (শেখ হাসিনা) খুব ভালোভাবে করতেন যেকোনো মামলার রায়ের আগে বলে ফেলতেন, ওইটা ওটা কখনো সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। তাই অনুরোধ করব, এমন কথা-বার্তা না বলা যেটাতে জনগন বিভ্রান্ত হয়।
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমাদের বাংলাদেশের মানুষ আমরা অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি। আমরা সব সময় সব সম্প্রদায় একসঙ্গে কাজ করে আসছি, একসঙ্গে যুদ্ধ করেছি। ইদানিং দেখছি আমরা একটা সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে একটা বড় রকমের আন্দোলন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। যেটা কেনো জানি না, ভারতের যে বক্তব্য বাংলাদেশের বিপদ সম্পর্কে তার সঙ্গে মিলে যায়।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, যেটা বাংলাদেশের এই বিপ্লব ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে যে অর্জন করা সেটাকে তো অনেকাংশে বিপন্ন করার চেষ্টা করছে। এই কথা বলতে আমি বাধ্য হলাম। আমাকে বিদেশের সাংবাদিকরা টেলিফোন করেন বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা তারা বলতে চান যে, স্যার ড. ইউনুস কি রাষ্ট্র্র চালাতে পারছেন না এই ধরনের কথা বার্তা তাদের কাছ থেকে আসে। আমি তাদেরকে বলি প্রশ্নই উঠতে পারে না। গোটা দেশের মানুষ তার উপর আস্থাশীল। তিনি সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। যাকে মানুষ সমর্থন দেয় সেখানে কোনো কিছু থাকতে পারে না।