ফাইল ছবি
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গুমের শিকার হওয়া ৬৪ জনের একটি তালিকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের দ্বারা ‘জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে’ গঠিত তদন্ত কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা তালিকাটি কমিশন বরাবর পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা ‘গুম পরিবারের সদস্য’র ব্যানারে গত ২৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতির কাছে একটি স্মারকলিপি দিতে আসেন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সেই স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
ওই স্মারকলিপিতে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক ও মানসিক দুর্দশার বিবরণের পাশাপাশি গুমের অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ, গুমের শিকার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ প্রদান, সরকারি খরচে মামলা পরিচালনার সুযোগ প্রদান ও গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্পত্তি বিক্রয় বা হস্তান্তরের নিমিত্ত বিশেষ সনদ প্রদানসহ আটটি বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সহযোগিতা কামনা করা হয়।
এছাড়া গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের প্রধান সমন্বয়ক আলহাজ্ব মো. বেল্লাল হোসেনের সই করা ওই স্মারকলিপিতে বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া মোট ৬৪ জন ব্যক্তির ছবি ও নাম, ঠিকানা সম্বলিত একটি তালিকা দেওয়া হয়। সেই তালিকাটি এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংস্থা সদস্যদের দ্বারা ‘জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে’ সরকার গত ২৭ আগস্ট একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।
কমিশন গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্টগার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
যেখানে এ কমিশনকে তদন্ত শেষ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে ৪৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়।