
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৬ এএম
ইস্ট লন্ডনে কন্ঠশিল্পী লাবনী বড়ুয়ার সংগীতানুষ্ঠানে শ্রোতাদের উচ্ছ্বাস

যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

সংগীত পরিবেশন করছেন কন্ঠশিল্পী লাবনী বড়ুয়া।
ইস্ট-লন্ডনের রিচমিক্স মিলনায়তনে জনপ্রিয় বৃটিশ-বাঙালি কন্ঠশিল্পী লাবনী বড়ুয়ার একক সংগীতানুষ্ঠান ‘লাবনি বড়ুয়া আনবাউন্ডেড’ এক ব্যতিক্রমী মাত্রা সংযোজন করেছে। রবিবার (০৬ এপ্রিল) কানায় কাণায় কাণায় পূর্ণ মিলনায়তন ভর্তি দর্শকেরা অনুষ্ঠান শেষে বিপুল প্রশংসা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
রাঙতা আর্টসের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে লাবনীর সঙ্গে কীবোর্ডে ছিলেন সুনীল যাদব, তবলায় পিয়াস বড়ুয়া, অক্টোপ্যাডে রিজান আহমেদ, কন্ঠ এবং বান্দুরা সহযোগিতায় করেন ইউক্রেনের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী একা কাটেরিনা। মেধাবী আবৃত্তিশিল্পী ও কবি তানজিনা নূর-ই সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলো প্রক্ষপনে ছিলেন সাহাব উদ্দিন বাচ্চু, সানি, সাবা ও জান্নাত।
অনুষ্ঠানে শিল্পী লাবণী একে একে-‘বিমূর্ত এই রাত্রি আমার মৌনতার সুতোয় বোনা একটি রঙিন চাদর’, ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধয়, আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়’, ‘জোছনা করেছে আড়ি আসেনা আমার বাড়ি’, ‘একটা গান লিখো আমার জন্য’, ‘আমার বন্ধু চিকন কালিয়া, দেইখো আসিয়া’সহ আরো একাধিক বাংলা, হিন্দি ও গজল গান পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে ‘ও আমার বন্ধুগণ চিরসাথী পথচলায়’ গানটি লাবণী বাংলা ভাষায় এবং ইউক্রেনের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী একা কাটেরিনা গানটি ইউক্রেনের ভাষায় গেয়ে সংগীতানুষ্ঠানকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলেন। যা অনুষ্ঠানকে ভিন্নমাত্রা এনে শ্রোতাদের মনজয় এবং প্রশংসা কুঁড়িয়েছে।
এক প্রতিক্রিয়ায় শিল্পী লাবনী বড়ুয়া বলেন, আপনাদের এই ভালবাসা ভোলার নয়। লন্ডনের বিভিন্ন দূরের শহর থেকে আমার গানে শুনতে ছুটে এসেছেন এটা আমাকে আরো বেশি রেওয়াজ ও সাধনায় অনুপ্রাণিত করবে। আশা করি আমার অজান্তে কোন ভুলত্রুটি হয়ে তাকে দর্শকেরা তা খুব ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের এই সাপোট্র্ ও ভালবাসা আরো বেশি অনুপ্রাণিত করবে।
লাবনীর সঙ্গীতগুরু পন্ডিত চিরঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, আমার ছাত্রীর গান এতো মানুষ ভালবেসে শুনতে এসেছেন; এটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনাদের আশীর্বাদ পেলে লাবনী আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
সৌধ পরিচালক টি এম আহমেদ কায়সার বলেন, এই সংগীতানুষ্ঠান নিরীক্ষাধর্মী নতুন গানের জন্যে এক নতুন দরজা খুলে দিলো। ইউক্রেনিয়ান বান্দুরা ও তাদের ঐতিহ্যের স্মারক সব সঙ্গীতের সঙ্গে আমাদের দক্ষিণ এশীয় সঙ্গীতের আশ্চর্য সংযোগ এবং এসব নিয়ে অপূর্ব সব উপস্থাপনা আমার খুব ভালো লেগেছে। এছাড়াও অনুষ্টানে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন হিলসাইড ট্রাভেলের হেলাল খান, গ্লোওমেনের প্রতিষ্ঠাতা স্নিগ্ধা মিষ্টি, সুজন বড়ুয়া প্রমুখ।
লাবনী; ইতোমধ্যে বৃটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাঙালি শ্রোতাদের মনজয় করেছেন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেওয়া লাবনী মূলত পরিবেশন করেন বলিউড, বাংলা উপশাস্ত্রীয়, ফোক এবং আধুনিক গান। হলভর্তি দর্শকেরা অনুষ্ঠান শেষে খুব আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। ইস্ট-লন্ডনে এরূপ প্রাণবন্ত সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন খুব কম দেখেছেন বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উত্তর জলদী গ্রামের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী সচিব অরবিন্দ বড়ুয়া ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কৃষ্ণা বড়ুয়ার মেয়ে কণ্ঠশিল্পী লাবণী বড়ুয়া; ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে ‘বৈশাখী স্টার অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। ২০১১ সালে প্রকাশ পায় গানের অ্যালবাম ‘মেঘলা ছেলে’। ২০১৪ সালে হাউস অব কমন্সে ‘হাণ্ডেড ইয়ার্স অব টেগর’ অ্যালবামে অংশগ্রহণ করেন তিনি।