
প্রিন্ট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫২ এএম
টাকা ফেরত পাবেন দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকরা : গভর্নর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আরো পড়ুন
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দুর্বল ব্যাংকে জমা রাখা অর্থ গ্রাহকদের ধাপে ধাপে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, জমাকৃত অর্থ ফেরত পেতে কিছুটা সময় লাগবে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ পরিস্থিতি নিয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের।
এক এনজিও প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে গত ১০ বছর আগে থেকে বলে আসছি যে এস আলমের ব্যাংকে আপনারা টাকা রাখবেন না। কিন্তু আপনারা টাকা রেখেছেন। তারা দুই শতাংশ সুদ বেশি দিয়েছে, আর আপনারা সেখানেই টাকা রেখেছেন; এখন ধরা খেয়েছেন।’
গভর্নর বলেন, ‘এখন আপনাদের আমরা উদ্ধার করব; কিন্তু এখনই সেটি সম্ভব না। আমরা ধাপে ধাপে করব; এ জন্য সময় দিতে হবে। আমরা ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্টের দিকে যাচ্ছি, কিছু ব্যাংক একীভূত করতে হবে। অনেক কিছু করা যাবে, করা হবে। এ বছরেই হয়তো অনেক কিছু করা হবে। এতটুকু বলতে পারি, আপনারা টাকা পান, আর বন্ড পান, কিছু একটা পাবেন।’
এ সময় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, বড় বড় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে এবং তাদের মধ্য থেকে বড় বড় খেলাপি হচ্ছে। তাদের জন্য আমরা হয়রান অবস্থায় রয়েছি। সে তুলনায় ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতারা অনেক ভালো আছে।
টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিতরণ করা ক্ষুদ্রঋণ কতটা ভূমিকা রাখছে সেটি পর্যালোচনার পরামর্শ দেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল কাদের। তিনি বলেন, বর্তমানে দাবি করা হয় ছয় কোটি ৪০ লাখ ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতা রয়েছেন। তবে ওভারল্যাপিং অ্যাডজাস্টমেন্ট করলে এই সংখ্যা অনেক কমে যাবে। আমার মতে এটি তিন কোটি বেশি হবে না। সে ক্ষেত্রে আনসাসটেইনেবল ঋণ বাড়ছে কিনা সেটি দেখতে হবে।
ফজলুল কাদের আরও বলেন, সরকারের ২২টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এগুলোর প্রয়োজন আছে কিনা সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে গভর্নর আহসান মনসুর বলেন, সরকারের ২২টা মন্ত্রণালয়ে যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চলছে, সেটির যৌক্তিকতা আছে কিনা তা দেখা প্রয়োজন। আমি মনে করি সরকারের এ ধরনের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রাহকের মাঝে ৩ লাখ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
এমআরএ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট বিতরণকৃত ক্ষুদ্র ঋণের মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণ ২ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক থেকে ৯৭ হাজার কোটি টাকার আমানত তুলেছে। এর মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করেছে ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ সালে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ৭২৪টি প্রতিষ্ঠানের ২৬ হাজারের বেশি শাখা রয়েছে বলে জানানো হয়।